কীভাবে অল্প খরচে টার্কির ওজন বাড়ানো যায় | How to increase weight of turkey Bird at low cost


আশা করি সবাই আল্লাহ্‌র রহমতে ভাল আছেন এবং আপনার টার্কিরাও ভাল আছে। আজ আপনি আপনাদের সাথে এমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলব যেটা সৌখিন এবং বাণিজ্যিক সকল খামারির জন্যই সমান গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হল কীভাবে আমরা বিভিন্ন সিজনে সহজলভ্য বিভিন্ন রকম খাদ্য শস্য দিয়ে একটা সুষম খাদ্য তালিকা তৈরী করতে পারি।
ইংরেজীতে একটা কথা আছে "ইউ আর হোয়াট ইউ ইট (you are what you eat)" মানে আমাদের সকল কিছুই নির্ভর করে আমরা কি খাই তার উপর এই কথাটা প্রাণীজগতের অন্য সকল সদ্যসের ক্ষেত্রেই সত্য।
একটা বাস্তব উদাহরণ দেই কাজী টার্কি হ্যাচারী থেকে শামীম এবং তয়ন নামে দুই বন্ধু শখ করে পালন করার জন্য ১০ টি করে টার্কির বাচ্চা নিল সম বয়সের কিন্তু দেখা গেল ৪ মাস পরে  শামীমের টার্কির ওজন তয়নের চেয়ে গড়ে ১ কেজি করে কম। এর কারণ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে যে এখানে খাদ্য টাই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।
ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অ্যাগরিকালচার শুরু হওয়ার পর থেকেই সারা বিশ্বে অর্গানিক কৃষিকে ভুলে কমার্শিয়াল ফিড এর উপর নির্ভর করার একটা প্রবণতা শুরু হয়েছে যার হাওয়া লেগেছে বাংলাদেশেও।এরই মাঝে অনেক খামারী খরচ কমানোর জন্য হাতের নাগালে পাওয়া যায় এমন অনেক খাদ্য শস্য টার্কিকে দিয়ে থাকেন।তবে সেটা বৈজ্ঞানিক উপায়ে না হওয়ার জন্য আশানুরূপ ফল পান না।যারা একটু অ্যাডভান্সড তারা ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন খাদ্য তালিকা ফলো করেন তবে সমস্যা হল এই খাদ্য তালিকায় যেসব খাদ্য থাকে তা হয়ত সব সিজনে কম দামে পাওয়া যায় না তাই খাদ্য তালিকার উপাদানে পরিবর্তন আনতে হয় আর তখনি ঐ তালিকা তার কার্যকারীতা হারায়।
আজকে আমি দেখাবো কিভাবে আপনি একটা সুষম খাদ্য তালিকা বানাবেন।
খাদ্য তালিকা বানানোর একটা জনপ্রিয় মেথড হল পিয়ারসন স্কয়ার মেথড তবে এটাতে শুধু দুইটা উপাদান যোগ করা যায়।তবে আমার এই মেথডে আপনি অনেকগুলো উপাদান যোগ করতে পারবেন আর প্রয়োজনে পরিবর্তনও করতে পারবেন রেশিও ঠিক রেখে ।
প্রত্যেক খাদ্যতে ক্রুড প্রোটিন (crude protien) বলতে একটা বিষয় থাকে যা প্রোটিনের মাত্রা নির্দেশ করে আর এটা হিসেব করা হয় শতকরা হিসেবে। যেমন ভূট্ট্রার ক্রুড প্রোটিন ৭.৫%।মনে করেন এখন এমন একটা সিজন চলছে
যখন ভূট্ট্রা , গম আর সয়াবিন বেশী পাওয়া যাচ্ছে।আমরা এগুলো দিয়েই একটা তালিকা বানাবো।
টার্কির বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন রকম খাদ্য দরকার যেমন প্রথম মাসে এমন খাবার দরকার যেটাতে ২৮% প্রোটিন আছে। পরে আস্তে আস্তে প্রোটিনের মাত্রা কমে আসে । লেয়ার ফিড এ ১৮% প্রোটিন থাকে। বাজারে যে স্টার্টার,গ্রোয়ার,লেয়ার ফিড পাওয়া যায় তা এই প্রোটিনের মাত্রার উপর ভিত্তি করেই আলাদা আলাদা নামকরন করা হয়েছে।
আমরা আজ যে তালিকা বানাবো সেটাতে ১৮% প্রোটিন থাকবে মানে লেয়ার ফিড।তার আগে চলুন একটুখানি অংক করে আসি।
১। ভূট্ট্রাঃ
ভূট্ট্রার ক্রুড প্রোটিন ৭.৫% হওয়ায় ২০ কেজি ভূট্ট্রায় টোটাল প্রোটিনের পরিমাণ  ২০ X (৭.৫  / ১০০) = ১.৫ কেজি প্রোটিন
২। গমঃ
গমের ক্রুড প্রোটিন ১৩.৫% হওয়ায় ২০ কেজি গমে টোটাল প্রোটিনের পরিমাণ  ২০ X (১৩.৫  / ১০০) = ২.৭ কেজি প্রোটিন
৩। সয়াবিন মিলঃ
সয়াবিন মিলের ক্রুড প্রোটিন ৪৪% হওয়ায় ১২ কেজি সয়াবিন মিলে টোটাল প্রোটিনের পরিমাণ  ১২ X (৪৪ / ১০০) = ৫.২৮ কেজি প্রোটিন
তাহলে ৫২ কেজি খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ ৯.৪৮ কেজি যা শতকরা হিসেবে
১৮.২৩% । এর পাশাপাশি আপনারা টোটাল খাবারের হিসাব অনুযায়ী ডিসিপি,ক্যালসিয়াম,মিথিওনিন,লাইসিন,কোলিন,এনজাইম,টক্সিন বাইন্ডার,ভিটামিন অ্যাড করে নিবেন।
আপনি চাইলে গম বা ভূট্ট্রার বদলে ধান ব্যবহার করতে পারেন তবে আগে ধানের ক্রুড প্রোটিন জানতে হবে।ক্রুড প্রোটিন বিষয়ে তথ্য ইন্টারনেটে পাবেন।
আজ এপর্যন্তই। আল্লাহ্‌ হাফেজ ।

Related product you might see:

Share this product :

Post a Comment