টার্কির বাজার নিয়ে বিরুদ্ধবাদীদের শংকা | Opposition threat against Bangladesh Turkey Bird market !

আজকাল লক্ষ্য করা যাচ্ছে ফেসবুকে টার্কির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন রকম বিরূপ মন্তব্য করছেন। আবার উৎসুক নতুন খামারী বা সৌখিনদের অনেকেই দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছে টার্কি পালণ করবেন নাকি অন্য কিছু ? অনেকেই শংকিত টার্কির ভবিষ্যৎ কবুতরের বাজারের মত হবেনা ? কয়েক হাজার টাকার টার্কি কয়েক শত টাকায় বিক্রি করতে হবেনাত ?
 কেউ কেউ আবার রাখঢাক না করে সরাসরি টার্কিকে এম.এল.এম কোম্পানী ডেস্টিনি এর সাথে তুলনা করছেন এবং করুণ পরিণতির দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তাদের কয়েকটা যুক্তি হচ্ছে টার্কির যদি এতই চাহিদা থাকে তাহলে হাটে-বাজারে কেন টার্কি পাওয়া যায়না? আর এত দাম দিয়ে টার্কিই বা কে কিনে খাবে ? আবার টার্কি যদি আন্তর্জাতিক ভাবে এতই চাহিদা সম্পন্ন হয়ে থাকে তাহলে এখনো বাংলাদেশে এটি রপ্তানীর প্রসেসে আসেনি কেন ?
এহেন পরিস্থিতিতে একজন টার্কি খামারী হিসাবে টার্কির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার মতামত ও ভাবনা তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
প্রথমত আমি আমি সমালোচকদের সাথে একটি বিষয়ে একমত যে, বর্তমান দামে অর্থাৎ ৩,০০০-৪,০০০/- দিয়ে কেউ টার্কি কিনে খাবেনা এটা খুবই স্বাভাবিক। দাম হাতের নাগালে আসলে আশাকরি আপনিও (সমালোচক) এর স্বাদ নিতে চাইবেন । আর দাম হাতের নাগালে আসার মূল প্রতিবন্ধক হচ্ছে চাহিদার সাথে যোগানের ভারসাম্য না থাকা। এখন অধিকাংশ টার্কি ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে খামারী ও সৌখিনদের মাঝে।তাও আবার এর বেশীর ভাগই হয় ভার্চুয়াল মাধ্যমে। গণমাধ্যমে প্রচারকৃত টার্কি বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিবেদন ও ভার্চুয়াল মাধ্যমের কল্যাণে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হচ্ছে টার্কি সেক্টরে। আবার ব্রয়লারে ক্রমাগত লসের কারনে অনেক পুরাতন পোল্ট্রি ব্যবসায়ীও ব্রয়লার ছেড়ে টার্কির দিকে ঝুঁকছে। আর এই ক্রমবর্ধমান টার্কির বাচ্চার চাহিদার কারনেই ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে অর্থাৎ হাটে-বাজারে টার্কি খুজে পাওয়া যায়না। ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে টার্কি তখনই পাওয়া সম্ভব যখন খামারী পর্যায়ে টার্কির বাচ্চার চাহিদা পূরণ হবে।
হাটে-বাজারে বা পোর্ট্রির দোকান গুলোতে টার্কি পেতে হলে আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে আশাব্যঞ্জক হারে টার্কি ফার্মিং শুরু হয়েছে। আর তাই আশা করা যায় ভোক্তা পর্যায়ে টার্কি আসতে হয়তো খুব বেশীদিন লাগবেনা।
যারা শংকায় আছেন টার্কির মার্কেট কবুতরের মার্কেটের মত পরে যাবে, আমি মনে করি তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন ॥ সহজ কথা কেন বুঝতে পারছেননা টার্কি মাংস উৎপাদনে ব্যবহূত হয় পক্ষান্তরে কবুতর শুধুমাত্র সৌখিন পাখি। টার্কির মিট হিসাবে ভ্যালু আছে। আর তাই টার্কি কবুতরের মত কিছুদিন পরে কয়েক হাজার টাকার জিনিস কয়েক শত টাকায় বিক্রির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে দাম কমে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমি মনে করি দাম কমে গিয়ে একটি ০৬-০৭ কেজি ওজনের টার্কির দাম ২,০০০-২,৫০০/- এর মধ্যে হলে সেটাই হবে টার্কির সঠিক এবং স্বাভাবিক মূল্য।
আর রপ্তানীর কথা কি বলবো-এই নগন্য সংখ্যক টার্কি নিয়ে যেখানে দেশীয় উদ্যোক্তাদের বাচ্চার চাহিদাই মেটানো সম্ভব হচ্ছেনা সেখানে এত জলদি জলদি মাংস রপ্তানির কথা বলে প্রশ্ন তোলাটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা প্রশ্নবিদ্ধ। রপ্তানীর পর্যায়ে যেতে হলে বৃহৎ উদ্যোগ ও তারচেয়ে বৃহত্তর প্রজেক্ট দরকার॥
একজন টার্কি খামারী হিসাবে টার্কির ভবিষ্যৎ হিসাবে আমি স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে প্রতিটি পরিবারে যেমন দেশীয় জাতের হাঁস-মুরগী পালণ করা হয়, ঠিক তেমনি একদিন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি গ্রামীন পরিবারে টার্কি পালণ হবে। কারণ টার্কি পালণ অনেক সহজসাধ্য ও আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাটা অনেক বেশী।
বিঃদ্রঃ লেখাটি পড়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণকারীদের আঁতে ঘা লাগলে লেখক দায়ী নয়।

Related product you might see:

Share this product :

Post a Comment